গাজীপুর কালীগঞ্জের নাগরী ধর্মপল্লীতে সেন্ট নিকোলাসের পর্ব অনুষ্ঠিত
মুজিবুর রহমান ;
গাজীপুর কালীগঞ্জের নাগরী ধর্মপল্লীতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সেন্ট নিকোলাসের পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অত্র ধর্মপল্লী বা মিশনের প্রতিপালক সেন্ট নিকোলাস টলেন্টিনু’র প্রতি খ্রীষ্টভক্তদের ভক্তি, ভালোবাসা ও বিশ্বাসের নিদর্শন স্বরূপ আজ শুক্রবার ভোর ৬ টায় ও সকাল ৯ টায় দুটি খ্রীষ্টযাগ বা উপাসনার মধ্য দিয়ে নাগরী ধর্মপল্লী র্গীজায় এ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা ডাইসেস এর আর্চ বিশপ বিজয় এন ডি ক্রুশ ২টি মিশার মাধ্যমে উপাসনার দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অত্র ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ এবং ফাদার সেন্টু কস্তাসহ বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত অন্যান্য ফাদার, সিস্টার ও ব্রাদারগণ। ভক্তরা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মানত নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। ভক্তিপূর্ণ প্রার্থনা বা উপসনার মধ্য দিয়ে প্রশান্তি লাভের এই পর্বোৎসব অত্র এলাকার খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় ঐতিহ্য।
এই পর্ব অনুষ্ঠানের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ৯দিন যাবত সকাল- বিকাল নবেনা বা বিশেষ উপাসনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন র্গীজার ৩০/৩৫ জন ফাদার, ব্রাদার ও সিসটারগন এই বিশেষ উপাসনায় উপস্থিত থেকে সহায়তা দিয়েছেন।
জানা যায় বাংলাদেশে গাজীপুর কালীগঞ্জের নাগরীতে সেন্ট নিকোলাসের গীর্জা ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের শুধুই একটি ধর্মীয় উপাসনালয় নয়, এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে ষোড়শ শতকের পর্তুগীজ শাসন আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই গীর্জার ভেতরেই আশ্রিত সরনার্থীদের মধ্যে একসাথে চলত মুসলমানদের জুম্মার নামাজ, হিন্দুদের পূজা এবং খ্রিস্টানদের খ্রীষ্টযাগ বা ধর্মীয় উপাসনা। গাজীপুর কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের নাগরী গ্রামে ১৬৬৩ সনে “সেন্ট নিকোলাস টলেন্টিনু গীর্জা” নামে পর্তুগীজরা এই গীর্জা বা উপাসনালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন।
নাগরীতে ষোড়শ শতকের শেষের দিকে পর্তুগীজ খ্রিস্টানরা আস্তানা ফেলে এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের অনুমতিক্রমে ১৬৬৩ সনে তারা প্রথম র্গীজা স্থাপন করেন এখানে। তার ১৭ বছর পর ১৬৮০ সনে পাকা ইমারত তৈরী করা হয় যা বিশ্বব্যপী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ, গবেষক ও শিক্ষানুরাগীদের নিকট এই গীর্জাটি বিশেষভাবে সমাদৃত।