কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক যুবককে সাবেক প্রেমিকার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বরাই গাছে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকার স্বামীও তার স্বজননেদের বিরুদ্ধে।
গতকাল শনিবার (২৬ ফেব্রæয়ারী) সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কালীগঞ্জ সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সোহেল ভূঁইয়া বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও বাজার কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দক্ষিণবাগ এলাকার মৃত ছালাম ভূঁইয়ার ছেলে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলো একই এলাকার মৃত মঞ্জুর ভূঁইয়ার ছেলে জুবায়ের ভূঁইয়া (২২) ও মেয়ে জেমি ভূঁইয়া (৩০), গাজীপুর জেলা আদালতের শুক্কুর আলী হিমেল ও আব্দুল মজিদের ছেলে শুকুর আলী (৩৮) এবং জামালপুর এলাকার ফিরোজ শেখের ছেলে মামুন শেখ (৩৫)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন। মামুন শেখ মঞ্জুর ভূঁইয়ার মেজো মেয়ে জেরিন ভূঁইয়ার স্বামী।
নিহতের ভাই সোহাগ মিয়া ও স্থানীয়রা বলেন, জেরিন ভুইয়ার সাথে বেশ কয়েক বছর যাবৎ তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জেরিনের মা অবগত ছিল। কিন্ত হঠাৎ করে জেরিনকে মামুন শেখ এর সাথে বিয়ে দেয়। বিষয়টি সোহেল কোনক্রমে মেনেনিতে না পেরে প্রায়ই তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাতায়াতের সময় গালিগালাজ করত।
সেই সুত্রধরে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দক্ষিণবাগ এলাকার মোতালেবের বাড়িতে সোহেল ভূঁইয়া অবস্থান করছিল, জেরিনের পরিবার পরিকল্পিতভাবে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সোহেলকে ধরে জোরপুর্বক বাড়িতে এনে বরাইগাছের সাথে বেঁধে বেদম প্রহার করে হাত পা ভেঙ্গে গুড়িয়েদেয়। ওই রাতে বাহদুশাদী ইউনিয়র স্বাস্থ্য সেবাথেকে ডা.সিরাজ নামে একজনকে বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।
রাত আনু. ১টার দিকে সোহেলকে কালীগঞ্জ সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়েগেলে সকাল জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ভোর বেলায় সোহেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে জেরিনের বাড়ির সকল সদস্য বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে তার আরেক আত্বীয় সোহাগ মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন সোহেল আর জেরিনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। পরে জেরিনকে জামালপুরে বিয়ে দিয়ে দেয় তার পরিবার। এরপর থেকে সোহেল মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পরে। তাই মাঝে মধ্যে তাদের বাড়ির পাশে গিয়ে বসে থাকতো। শুক্রবার রাতেও গিয়েছিল। সে সময় তাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে অভিযুক্তরা।
কালীগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আজাদ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে সোহলকে মঞ্জুরের বাড়ি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈয়দ আবিদুল আরেফীন রেজভী বলেন, রাত আড়াইটার দিকে সোহেল ভূঁইয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তার হা-পা ভাঙ্গা ছিলো। তাকে হাসাপাতালে নিয়ে আসেন জুবায়েল। সকাল ৮টার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাসপাতাল থেকে নিহত সোহেল ভূঁইয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।